খিলজি বংশ (1290-1320 খ্রিস্টাব্দ): দিল্লি সুলতানাতের দ্বিতীয় রাজবংশ
ঐতিহাসিক পটভূমি ও উত্থান
দিল্লি সুলতানাতের দ্বিতীয় শাসকবংশ খিলজি বংশ (1290-1320 খ্রিস্টাব্দ) ছিল একটি তুর্কি-আফগান রাজবংশ। দাস বংশের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জালালউদ্দিন খিলজি ক্ষমতা দখল করেন এবং মধ্য এশিয়ার খিলজি গোত্রের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
গুরুত্বপূর্ণ সুলতান ও তাদের অবদান
১. জালালউদ্দিন খিলজি (1290-1296 খ্রিস্টাব্দ)
প্রথম খিলজি সুলতান, বয়সের কারণে নরমপন্থী নীতি গ্রহণ করেন।
অবদান:
মঙ্গোলদের সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন।
দাক্ষিণাত্য অভিযান শুরু করেন (দেবগিরি আক্রমণ)।
মৃত্যু: তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা আলাউদ্দিন খিলজি তাঁকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেন।
২. আলাউদ্দিন খিলজি (1296-1316 খ্রিস্টাব্দ)
খিলজি বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক, যিনি সাম্রাজ্যকে সর্বাধিক বিস্তৃত করেন।
প্রশাসনিক সংস্কার
সংস্কার | বিবরণ |
---|---|
বাজার নিয়ন্ত্রণ | দাম নির্ধারণ (মনসবদার নিযুক্ত) |
জমি জরিপ | রাজস্ব আদায়ের জন্য ভূমি পরিমাপ |
সেনাবাহিনী | স্থায়ী সেনাবাহিনী গঠন, নগদ বেতন |
সামরিক অভিযান
উত্তর ভারত: রণথম্ভোর, চিত্তোর, গুজরাত জয়।
দাক্ষিণাত্য: দেবগিরি, ওয়ারাঙ্গল, মালাবার আক্রমণ (মালিক কাফুরের নেতৃত্বে)।
মঙ্গোল আক্রমণ প্রতিহত: 1299 ও 1306 সালে মঙ্গোলদের পরাজিত করেন।
ধর্মীয় নীতি
জিজিয়া কর পুনর্বহাল করেন।
হিন্দু মন্দির ধ্বংস (যেমন: চিত্তোরের কালিকা মন্দির)।
খিলজি বংশের পতনের কারণ
আলাউদ্দিনের মৃত্যুর পর দুর্বল উত্তরাধিকার (শিহাবউদ্দিন ও কুতুবউদ্দিন মোবারক শাহ)।
মালিক কাফুরের ক্ষমতার অপব্যবহার (আলাউদ্দিনের মৃত্যুর পর ষড়যন্ত্র)।
গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের বিদ্রোহ (1320 খ্রিস্টাব্দে তুঘলক বংশের উত্থান)।
সাংস্কৃতিক অবদান
ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্য: আলাই দরওয়াজা (কুতুব কমপ্লেক্সে)।
সঙ্গীত ও সাহিত্য: আমির খসরু (আলাউদ্দিনের রাজদরবারে কবি)।
দ্রুত সংশোধনী
✔ প্রতিষ্ঠাতা: জালালউদ্দিন খিলজি (1290)।
✔ শ্রেষ্ঠ শাসক: আলাউদ্দিন খিলজি (বাজার নিয়ন্ত্রণ, দাক্ষিণাত্য বিজয়)।
✔ সেনাপতি: মালিক কাফুর (দক্ষিণ ভারত আক্রমণ)।
✔ পতন: 1320 খ্রিস্টাব্দে তুঘলক বংশের উত্থান।